দমের বার্তা (পর্ব :১)

একটি স্বর বিজ্ঞান। 
---------------------------

আজ আমার আলোচনামূলক পোষ্ট স্বর বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা করব। এ বিজ্ঞান এর জ্ঞান কে পুঁজি কর কত ব্যাবসা চলছে আমাদের উপমহাদেশে, নতুন করে কি বলব।

যাই হোক এ জ্ঞানটা মূলত সনাতন ধর্ম থেকে সাধু মহৎদের মাধ্যমে ছড়িয়েছে। এ বিজ্ঞানের প্রয়োগ সর্বপ্রথম মহামতি শিব পার্বতীকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। শিব মাতা পার্বতীকে বলেছিলেন " হে পার্বতী! যে এই স্বর জ্ঞান পুরোপুরিভাবে জানলে এবং এর সঠিক প্রয়োগ করল, গ্রহ নক্ষত্রও তার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। " আজ আমরা সেই বিষয়ে কিঞ্চিত আলাপ করব যা আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগতে পারে। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আগাম খবর পেতে পারেন। তাছাড়াও বহু উপকার রয়েছে। মূলত যে বিপদ, ক্রোধ, অসুস্থতা আপনাকে অস্থির করে তোলে। তা আসার আগেই জানা এবং তা থেকে রিমুভ করাই মূল লক্ষ্য।

আমাদের দেহে বহু নার্ভ বা নাড়ী বিদ্যমান এর মধ্যে প্রধান তিন নাড়ী ইড়া, পিঙ্গলা আর সুষমা। বুঝিয়ে দিচ্ছি-
ইড়া :-সাধু মহৎরা যাকে চন্দ্রস্বর বলে ডাকে যা আমাদের বাঁ নাকের ছিদ্রের নি:শ্বাস কে বলা হয়। Left Nostril Breath. মানসিক কর্ম সংগঠন করে।

পিঙ্গলা :-আমাদের নাকের ডান ছিদ্রের নি:শ্বাস কে সূর্য স্বর বলে থাকেন সাধু মহৎ ব্যাক্তিগন এটাই পিঙ্গলা নাড়ীর কর্ম বলে থাকেন। যা আমাদের Right Nostril Breath. দৈনিক কার্যপ্রণালী সংগঠিত করে।

সুষমা নাড়ী :-যখন নাকের দুই ছিদ্র দিয়ে নি:শ্বাস সমানতালে বহে তখন তাকেই সুষমা নাড়ীর নি:শ্বাস বলা হয়ে থাকে। Both Nostril Breath.এটা কেন্দ্রীয় শক্তি।

এই নাড়ীর স্বর কি কাজে লাগে আমাদের?
ধরুন আমরা যখন ডান নাকের ছিদ্র দ্বারা ৫৫/৫৬ মিনিট নি:শ্বাস নেই তখন আমাদের শরীরে গরম তাপমাত্রা থাকে। যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই শরীর নিয়ে থাকে।যদি ধরেন নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সূর্যস্বর না বয়ে ৪/৫ ঘন্টা বইছে তখনই আমাদের রাগ,গোস্বা আবেগতাড়িত হয়ে ভুল কাজও হয়ে যেতে পারে।
তাছাড়া আমরা বাংলা মাসের গণণা হিসেবে কৃষ্ণ পক্ষ আর শুক্লপক্ষ ভাগ করে নেই। যদি আপনি কৃষ্ণ পক্ষের প্রথম দিন ভোর বেলায় উঠে দেখেন এক ঘন্টা পর্যন্ত সূর্যস্বর চলছে তবে মনে রাখবেন আপনার ১৫ দিন অনেক ভাল যাবে। স্বাস্থ্য ভাল থাকবে, Nagetive Violence কম আসবে।

আবার যখন বাম নাকের ছিদ্র দ্বারা ৫৫/৫৬ মিনিট নি:শ্বাস নেই তখন আমাদের শরীরে ঠান্ডা তাপমাত্রা পায় । আর যদি নির্দিষ্ট সময়ের বেশী ৪/৫ ঘন্টা চন্দ্রস্বর বয় তবে আপনার ভেতর আলসেমীভাব আসবে , দূর্বল হয়ে যাবেন। আর যদি কৃষ্ণ পক্ষের প্রথম দিন চন্দ্রস্বর বয় তবে আগামী ১৫ দিন খুব খারাপ যাবে।

সুষমা স্বর হল ধ্যাণী যোগী ধার্মিক ব্যাক্তিগন এর জন্য। সে সময় সকল কাজ ছেড়ে তারা সাধনায় ব্রত হয়ে থাকেন।

আবার ধরুণ সকালে ৭ টা বাজে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন যে আপনার নি:শ্বাস ৫৬ মিনিটের যায়গায় পরপর ৩০ মিনিট সূর্যস্বর আর ৩০ মিনিট চন্দ্রস্বর বয়েছে মনে রাখবেন তবে আগামী ৭ দিন আপনার ভাল যাবে আর ৭ দিন খারাপ যাবে।
শুক্লপক্ষের ঠিক তার বিপরীতে হবে।
ঠিক এভাবেই ক্যালকূলেট করে আপনি তিথি থেকে শুরু করে প্রতিটিদিনের ভালমন্দের খবর জানতে পারি।
ধরুণ আপনার শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা, অসুস্থতা খুব বেশী। তখন আপনি স্বর বা নি:শ্বাস পরিবর্তন করে দেখতে পারেন।
পরিবর্তন এর দুটি উপায় বলে দিচ্ছি।
১)ধরুণ সূর্যস্বর চলছে চন্দ্রস্বরে আনবেন আপনার নি:শ্বাস তখন বাম পায়ের গুটনি দাবিয়ে আপনার হিপবলের উপর প্রেসার দিন ১০ মিনিটের মধ্যে পরিবর্তন হবে।
চন্দ্রস্বর চলছে সূর্যস্বর আনবেন ঠিক এর বিপরীত করবেন।
২) শবাসনের মত শুয়ে পড়ুন। ডান নাকে নি:শ্বাস আনতে চান তবে বাম কাত হয়ে বাম হাত শরীরের নীচে রেখে ডান হাত উপরের দিকে তুলুন। ১০ মিনিটের মধ্যে পরিবর্তন আসতে বাধ্য।
বাম নাকে আনতে চাইলে ঠিক তার উল্টোটা করুন।

চলবে......

উৎসর্গ : সে সকল সাধু মহাত্মদের, যাদের বদৌলতে বহু আগেই এ জ্ঞান লাভ করেছিলাম।