হযরত সুফিয়ান সওরী (রহঃ) যখন মায়ের গর্ভে তখন তার মা এক প্রতিবেশিনীর খাবার পাত্রে বিনা অনুমতিতে আঙ্গুলের ডগা দিয়ে কোনও খাদ্যবস্তুর স্বাদ নিলেন, সাথে সাথে তার গর্ভস্থ সন্তান কেঁপে উঠল। অথচ মা ছিলেন বুদ্ধিমতি ও ধর্মভীরু। তিনি বুঝতে পেরে প্রতিবেশিনীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন। কাঁপুনি থেমে গেল। এ গর্ভস্থ সন্তান বড় হয়ে হলেন বিখ্যাত সাধক।
হযরত সুফিয়ান
সাওরী (রহঃ) ঊনিশ বছর পর ঘরে ফিরে এসেছেন। সেই মা ও কেমন ছিলেন ! ঘরে
ফিরেছেন রাতের বেলা। দরজায় কড়া নেড়েছেন । মাকে আল্লাহ হায়াত দিয়েছিলেন । মা জীবিত ছিলেন। ভিতর থেকে বললেন কে ? বললেন তোমার পুত্র সুফিয়ান। মা বললেন বাবা কাউকে কোনো জিনিস উপহার দিয়ে তা ফিরত নেওয়া খুবই অপমানের বিষয়। আমি তো তোমাকে
আল্লাহ কে দিয়ে দিয়েছি।তোমাকে ফিরিয়ে নেওয়া বড়ই অপমানের বিষয় মনে হচ্ছে। তোমার জন্য এই দুনিয়াতে আমি দরজা খোলবো না। ফিরে যাও, কেয়ামতের দিন সাক্ষাৎ হবে। সেই
দিনই সান্ত্বনা লাভ করবো। মা দরজা খোলেন নি সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) ফিরে গেছেন ।
উনি বলতেন
★একমাত্র আল্লাহই আরেফকে মারেফত, আবেদকে নৈকট্য, আর হাকিম কে হেকমত প্রদাণ করেন।
★ ক্রন্দন দশ প্রকারের, তার মধ্যে নয় প্রকারেরই রিয়া।
★পূণ্যবানরা পূণ্য কর্ম করে যদি অহংকার প্রকাশ করে তবে তার নাম রিয়াকারদের দপ্তরে লিখিত হয়।
★ যার মধ্যে ইয়াকীন থাকে সে মারেফত হাছিল করতে পারেন। আর ইয়াকীন বলতে তিনি বুঝতেন ক্বালবী আওয়াজ।
জীবে দয়া
-------------
সুফিয়ান সওরী (রহঃ) মৃত্যুর দিন সবাই এক অদৃশ্য শব্দ শুনতে পান। মাতাল ওয়ারা - মাতাল ওয়ারা অর্থাৎ পরহেজগার ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে।।
খুব দয়ালু দাতা ছিলেন সুফিয়ান সওরী (রহঃ)। পশুপাখীর প্রতিও দয়াদ্র চিত্ত ছিলেন। একদিন বাজারে খাঁচায় বন্দী একটি পাখী দেখতে পান। বাইরে বেরোবার জন্য ছটফট করে। তাঁর কোমল হৃদয় কেঁদে উঠে।
তিনি তখনই পাখীটিকে কিনে নিয়ে আকাশে ছেড়ে দিলেন। পাখিটি তার বাড়িতে আসা যাওয়া করত।তিনি নামাজে দাঁড়ালে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। কখনও কখনও তাঁর গায়ের উপর গিয়ে বসতো। যখন তিনি দুনিয়া হতে বিদায় নিলেন। উনার খাটের উপরেই পাখিটি কবরস্থান পর্যন্ত গেলো। প্রতিটি মানুষ পাখিটির ছটফট দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল।
সমাধিস্থ হওয়ার পর গায়েব হতে সুফিয়ান সওরী বলতে লাগলেন, আমি জীবে দয়া করতাম বলে আল্লাহ আমাকে দয়া করেছেন।
আজ এ পর্যন্তই......
A N W A R
Comments
Post a Comment