আমরা প্রায়ই দেখে থাকি গুরুবাদী হওয়ার পর সাধক সাধিকা হলে পরে অনেকের বিপদ আপদ ঘিরে ধরে। যার কারনে অস্থির পেরেশান হয়ে যাই। ভাবি গুরু ধরে ভুলই করলাম কিনা?
প্রায় সময়ই অনেক নতুন ভক্ত আমাকে বলে "ভাই বুঝলাম না কিছু এতোদিন এতো ভাল ছিলাম গুরু ধরার পর মনে হয় যেন বিপদ আপদ বাড়তে শুরু করেছে "।তাদের কথা শুনে কষ্টের চেয়ে বেশী আমার ভাল লাগে, তখন আমি বুঝতে পারি সে আমল করছে। সবাই শুনে থাকবেন যে,"সাধুর আঙ্গিনায় গেলে পূর্বের অসৎ স্বভাব কেটে যায়"
এবং এটাই সত্য। আপনি জীবনে অন্যায় করেন নি, মিথ্যা বলেন নি,কারও ক্ষতি করেন নি সবসময় ভাল ভাবে চলছেন এবং গুরুর স্মরণ নিচ্ছেন তবুও আপনার বিপদ আপদ,আমি বলি অস্থির না হয়ে খুশী হউন। কেননা পূর্বের কর্মে অসৎ স্বভাব গুলো এ বিপদ আপদের মধ্য দিয়েই কেটে যাচ্ছে।
সাধু মনমোহনের একটি উক্তি
"হউক না অনন্ত ক্ষতি ভয় পেওনা
আশা করে বসে থাক নিরাশ হয়োনা।"
এখন আসি পূর্বের কর্ম বলতে কি বুঝতেছি আমরা। এই কর্ম এ জনমের নাও হতে পারে আপনার। এটা প্রারুদ্ধ কর্ম যা আপনি বিগত যেকোনও জনম থেকে নিয়ে এসেছেন। এটার রেশ আপনার অর্থাৎ ফল আপনার দূর্ঘটনার পর মৃত্যু হতে পারতো কিন্তু ঐযে গুরু ধরেছেন গুরুকর্ম শুরু করেছেন তাই সে মৃত্যু আপনাকে দূর্ঘটনায় আঘাত পর্যন্তই শেষ করে দিয়েছে।
যে বিপদ আপনার বর্তমান আছে তার চেয়ে বড় বিপদ আপনার ভাগ্যে বা কর্মে ছিল। শুধুমাত্র গুরু স্মরণে কমে গিয়েছে। তাই হতাশ হবেন না। খুশী হউন এই ভেবে যে, আপনার কর্ম কবুল হয়েছে প্রভূর দরবারে। বহু আউলিয়া কেরাম সাহাবীরা যদি তাদের জীবনে বিপদ আপদ না থাকতো তারা কান্না করতেন এবং ভাবতেন প্রভূ বুঝি আমাকে ভুলে গিয়েছেন। আবার গুরুর সাথে বেয়াদবি করলে তাকে কষ্ট দিলেও কয়েক প্রকারের শাস্তি হয়। যেমন দূর্ঘটনা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। কিছু কিছু সাধক আছে তারা সারাদিনের ভালমন্দ খবর আগেই পেয়ে যায় তারপরও শাস্তি নিজেই বরণ করে নেয় যেমন মনসুরে হাল্লাজ,ইমাম হোসাইন। তারা ইচ্ছা করলে অনেক কিছু করতে পারতো কিন্তু করেনি। খাজাবাবা তাইতো বলে ইমাম হোসাইন অা এর দুলদুল ঘোড়াও যদি চাইতো পানির নহর বইয়ে দিতো পারতো। কিন্তু করেনি।ভেতরে বহু ভেদ আছে। গুরুর কাছে জেনে নিবেন।
অনেকে ভাবতে পারেন তবে গুরু ধরে কি লাভ ফল যদি পেতেই হয়? কর্মের ফল পেতেই হবে এটা আপনার কর্ম।যতদিন পর্যন্ত বাকাবিল্লাহতে অবস্থান না করবেন ততদিন পর্যন্ত আসা যাওয়া চলবে। আর এ কর্মফল আমাদের ভুগতে হবে। যখন পরিশুদ্ধ হতে পারবেন তখনই আল্লাহপাক আপনার হাত হয়ে যাবে, চোখ হয়ে যাবে সমস্ত দেহে বিচরণ করবে। নফসে মোলহেমা থেকে নফসে রহমানীতে যাওয়ার পর এ খেলা শুরু হতে থাকে। অামি সত্য আমি দ্রুব।গুরু কর্মে সবকিছু সহজ হয়ে যায়।
সাধু মনমোহনের আরেকটি উক্তি না বললেই নয়--
ঈশ্বরের প্রেম যিনি যত বেশী চায়,
অপমান দু:খ ক্লেশ ততবেশী পায়।
Comments
Post a Comment