গ্রাহামবেল আর জি মার্কনী টেলিফোন রেডিও আবিষ্কারের ও বহু আগেও মানুষ দূরদেশে নিজের ভাব আদান প্রদানের জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যাবহার করতো। কেউ পশু পাখি প্রশিক্ষণ দিয়ে, কেউ ঘোরসাওয়ারি দিয়ে পিয়ন দিয়ে চিঠি পাঠানো রানার পাঠানো হতো বার্তা পাঠানোর জন্য।
কিন্তু সাধু সন্ন্যাসীগণ, গুরু তার দূরের শিষ্যের কাছে অথবা সুখ্যাত বিখ্যাত মণীষিগণ তখনও বার্তা পাঠানোর জন্য ব্যাবহার করতো এখনও করে তার সাধনালব্ধ অমূল্য জ্ঞান টেলিপ্যাথী বা দূরবর্তী অনুভূতি। যার কোনও মাধ্যম ছিলনা।আমাদের মুসলিম সমাজ এই মাধ্যমকে কোনও কোনও যায়গায় ছাইয়্যাহীন ফেরেশতা বলে থাকেন ;যারা নবীপাকের দরুদ বহণ করে মদীনায় কেবল দরুদ পৌঁছান। আত্মজ্ঞানী মূর্শিদ গণ এটা স্পষ্টই বুঝে থাকেন যে দেহ মাঝে ফেরেশতা কারা। বিজ্ঞান এটাকে রিমোর্ট সেন্সিং বলে অভিহিত করেন।
প্রকৃত পক্ষে ছাইয়্যাহীন ফেরেশতা বা বার্তাবহনকারী এরা হল আমাদের ভাবনার মাঝে সূক্ষ তরঙ্গ সেলগুলো যা প্রতিটি সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দুতে বাতাস বহন করে যায়গামত পৌঁছে দেয়। এই বাতাস বাহিরে বাতাস নয় দেহ অভ্যন্তরীণ বাতাস;যার গতিবেগ বাহিরের বাতাসের চেয়েও দ্রুত বহে চলে। আর প্রতিটি সৃষ্টিই একজন অপরজনের সাথে সম্পর্ক যুক্ত। অনেকে এটাকে ব্রেইন টু ব্রেইন কনভারসেশন বলে থাকে সত্যি বলতে ব্রেইনের সাথে ব্রেইনের সংযোগ হয়না কখনও তবে হবে মাইন্ড টু মাইন্ড কনভারসেশন।
ইংল্যান্ডের ডাবলিনে বৈজ্ঞানিক ভাবে এ বিষয়ে ১৮২২ সালে গবেষণা শুরু হয়। বিভিন্নজনের গবেষণার পর স্যার অলিভার লজ টেলিপ্যাথি সম্পর্কে প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। গাথরী এক্সপেরিমেন্ট সাফল্য লাভ করে সর্বপ্রথম এক স্কুল শিক্ষক একজন মহিলার মস্তিষ্কে বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে। পরবর্তীতে ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকায় ১৯৩৯ সালে গবেষণা শুরু হয়। টেলিপ্যাথীর বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত পাবেন "থট থ্রো স্পেস " এবং "রিসার্চ অফ দি মাইন্ড" গ্রন্থে। বাংলা ভাষায় মোটামুটি ভাল লিখেছেন কোয়ান্টাম মেথডের মহাজাতক "চেতনা অতিচেতনার নিরাময় ও প্রশান্তি " বই তে। মনোবিজ্ঞানের এই প্যারাসাইকোলজিকাল বিষয়টি সম্পর্কে ভাল জানতে পারবেন।
কিন্তু এ সবের কোনটাতেই আধ্যাত্মিকতার রেশ পাবেন না। যদিও আধ্যাত্মিক বলা হয়। যদিও টেলিপ্যাথিকে মনোবিজ্ঞান তিনভাগে ভাগ করেছে -
১) ফিজিকাল টেলিপ্যাথি
২) ইমোশনাল টেলিপ্যাথি
৩) মেন্টাল টেলিপ্যাথি
★ আধ্যাত্মিকতায় মেন্টাল টেলিপ্যাথি
★ প্রেমে ইমোশনাল টেলিপ্যাথি
★ অসুস্থতায় ফিজিকাল টেলিপ্যাথি গুরুত্বপূর্ণ।
কিছুটা মিল থাকলে আধ্যাত্মিকতায় শাখা, উপশাখার অভাব নেই।
এবার আসি টেলিপ্যাথি কীভাবে কাজ করে আমাদের মাঝে :-
অনেক সময় দেখা যায় আপনি বা আপনারা কারও সম্পর্কে ভাবছেন হঠাৎ তার কল বা মেসেজ এসে উপস্থিত। একেই বলে টেলিপ্যাথি।সবচেয়ে বেশী কাজ করে মা তার সন্তানের ক্ষেত্রে।
প্রেমিক প্রেমিকার ক্ষেত্রেও এটা ভাল কাজ করে। ঐ প্রান্তে যদি আপনার প্রেমিকা আপনার জন্য পাগলপাড়া হয়, এ প্রান্তে আপনার হৃদয় ও তার জন্য কাঁদবে যদি সত্যিকার প্রেম হয়।
তবে এই টেলিপ্যাথি শান্ত স্থীর মনে বেশী কাজ করে। এর জন্য বেশী বেশী প্রাণায়াম, ধ্যাণ,মোরাকাবায় বসতে হবে।
সাথে সাথে দূরদৃষ্টি ক্ষমতা বা থার্ড আই সক্রিয় করতে হবে।
★কীভাবে আপনি বার্তা পাঠাবেন?
একটি ছোট টিপস দিয়ে শুরু করে দেখুন কাজ হবে। যারা নতুন তাদের জন্য এই টিপস।
*বসে পড়ুন ধ্যানে অথবা শুয়ে পড়ুন শবাসনের মত।
*একটু আরাম করে নিন।
*জোড়ে জোড়ে ৫/৭ বার নি:শ্বাস নিন।
*২ মিনিট চুপ করে নি:শ্বাসের আসা যাওয়ার দিকে খেয়াল রাখুন।
*কোনদিকে খেয়াল যাতে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
*এবার কি পাঠাবেন মনে মনে তা ভাবুন কয়েকবার।
*তারপর কাকে পাঠাবেন ধ্যানযোগে হৃদয় দিয়ে তাকে স্মরণ করুন।
*পাঠানোর সময় যাকে পাঠাবেন তার কথাই স্মরণ করুন।
বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দুজন দুজনের ভাবনা এক হলে দ্রুত পৌঁছায়।
হাস্যকর মনে হতেই পারে। চেষ্টা করে দেখুন কয়েক দিন নিয়মিত। আপনি যতবেশী ধ্যাণী, আপনার কার্যক্ষমতা ততবেশী। একটা মেসেজ দ্রুত পা ঠানো সম্ভব, যতটা আপনি ধ্যাণী।
★ তর্ক এড়িয়ে যাবেন প্লীজ। বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।
A N W A R
24/02/18
Comments
Post a Comment